বিসিএস পরীক্ষা (BCS Examination) বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন দ্বারা পরিচালিত একটি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষা। দেশের শিক্ষিত চাকরি প্রত্যাশীদের কাছে সবচেয়ে আকাঙ্ক্ষিত একটি স্বপ্ন হলো বিসিএস ক্যডার হওয়া। আমরা এখানে বিসিএস পরীক্ষার (BCS Exam) এর ধাপ, প্রক্রিয়া, যোগ্যতা, পরীক্ষা পদ্ধতি সহ সবকিছু নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
বিসিএস পরীক্ষা (BCS Examination)
বিসিএস (BCS) এর পূর্ণ অর্থ হলো বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (Bangladesh Civil Service)। বিসিএস পরীক্ষা (BCS Examination) এর মাধ্যমে বাংলাদেশ কর্ম কমিশন (Bangladesh Public Service Commission – BPSC) বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের জন্য বিভিন্ন ক্যাডারে কর্মকর্তা নিয়োগ করে থাকে। সুতরাং আমরা সহজে বলতে পারি বিসিএস পরীক্ষা (BCS Examination) হচ্ছে সিভিল সার্ভিসের কর্মকর্তা নিয়োগ পরীক্ষা। প্রশাসন, কর, পুলিশ, পররাষ্ট্র প্রভৃতি সহ মোট ২৬টি পদে কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য পর্যায়ক্রমে তিনটি ধাপে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
বিসিএস পরীক্ষা (BCS Examination) বাংলাদেশের চাকরির সবচেয়ে বড় প্রতিযোগীতামূলক একটি পরীক্ষা। দৈনিক প্রথম আলো এর একটি রিপোর্ট অনুসারে, ৪৪তম বিসিএস পরিক্ষায় বিভিন্ন ক্যাডারে ১ হাজার ৭১০ জন কর্মকর্তা নিয়োগের বিপরীতে বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় মোট আবেদনকারীর সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ৫০ হাজার ৭১৬ জন। অর্থাৎ প্রতি পদের বিপরীতে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২০৫ জন।
বিসিএস (BCS) একটি অত্যন্ত প্রতিযোগীতামূলক পরীক্ষা। প্রতি বছর সীমিত সংখ্যক পদের বিপরীতে গড়ে সাড়ে তিন লাখ থেকে চার লাখ পরীক্ষার্থী আবেদন করে থাকেন, যা যা বছরের চাকরি প্রার্থীদের প্রায় ৯০%। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের বিসিএস পরীক্ষা (BCS Examination) নিয়ে অধিক আগ্রহ ও মাতামাতির জন্য এটি নিয়ে অনেক তর্ক-বিতর্কও পরিলক্ষিত হয়। বিগত বিভিন্ন বিসিএস পরীক্ষার সাফল্যের পরিসংখ্যান লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে, এই পরীক্ষায় সকল ক্যাডার মিলে গড় সাফল্যের হার ০.০২% এবং সাধারণ ক্যাডারের ক্ষেত্রে যা মাত্র ০.০০৫% শতাংশ।
বিসিএস আবেদন যোগ্যতা (BCS Apply Qualification)
বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিতে একজন প্রার্থীর মূলতঃ নিচের যোগ্যতাগুলো বিবেচনা করা হয় –
- শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ অবশ্যই স্নাতক ডিগ্রিধারী।
- বয়সসীমাঃ ২১ থেকে ৩০ বছর।
- নাগরিকত্বঃ বাংলাদেশী।
বিসিএস পরীক্ষা দেওয়ার বিস্তারিত যোগ্যতা সম্পর্কে একটি পৃথক আর্টিকেল রয়েছে। বিস্তারিত পড়ুন বিসিএস আবেদন যোগ্যতা (BCS Apply Qualification)।
বিসিএস পরীক্ষার প্রক্রিয়া (BCS Exam Process)
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) পরীক্ষা মূলতঃ ব্রিটিশ ভারতীয় ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস (Indian Civil Service – ICS) বা ইম্পেরিয়াল সিভিল সার্ভিস (Imperial Civil Service) উপর ভিত্তি করে পরিচালিত হয়। বিসিএস পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ থেকে চূড়ান্ত ফলাফল পর্যন্ত সমগ্র প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে সাধারণত দেড় থেকে চার বছর সময় লাগে।
বিসিএস পরীক্ষা (BCS Exam) তিনটি ধাপে অনুষ্ঠিত হয়। এই ধাপগুলো হচ্ছে, প্রিলিমিনারি (প্রাথমিক বাছাই), লিখিত ও ভাইভা বা মৌখিক পরীক্ষা। এই তিনটি ধাপের পরে একজন প্রার্থীর চুড়ান্ত নির্বাচন হয়। আমরা নিচে এই ধাপ বা পরীক্ষা গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা (BCS Preliminary Examination)
বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা (BCS Preliminary Examination) হচ্ছে বিসিএস পরীক্ষার প্রথম ধাপ। এটিকে প্রার্থীর প্রাথমিক যোগ্যাতা বাছাই পরীক্ষাও বলা হয়। প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় একজন প্রার্থীকে ২০০ নম্বরের বহুনির্বাচনী (MCQ) প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। BPSC এর তথ্য মতে, “৩৪তম বিসিএস পরীক্ষা পর্যন্ত ১০০ নম্বরে প্রিলিমিনারি টেস্ট গ্রহণ করা হতো। বিসিএস পরীক্ষা বিধিমালা-২০১৪-এর বিধানমতে ৩৫তম বিসিএস পরীক্ষা হতে ২০০ নম্বরের ২ ঘণ্টা সময়ে ১০টি বিষয়ের উপর MCQ Type প্রিলিমিনারি টেস্ট গ্রহণের ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়েছে”।
বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য .৫০ নম্বর কাটা যায় এবং প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় পাশ নম্বর ৫০%।
বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার সিলেবাস (BCS Preliminary Syllabus)
প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় বাংলা ভাষা ও সাহিত্য, ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য, বাংলাদেশ বিষয়াবলী, আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী, ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, সাধারণ বিজ্ঞান, কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি, গাণিতিক যুক্তি, মানসিক দক্ষতা এবং নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সু-শাসন – এই দশটি বিষয়ে মোট ২০০ টি MCQ প্রশ্ন থাকে।
বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার সিলেবাস (BCS Preliminari Syllabus) সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে বিসিএস প্রিলিমিনারি সিলেবাস (BCS Preliminari Syllabus) দেখুন।
বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রশ্নের মানবন্টন (BCS Preliminary Marks Distribution)
বিসিএস প্রিলিমিনারি একটি ২০০ নম্বরের MCQ পরীক্ষা। প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রতিটি বিষয়ে সমান সংখ্যক প্রশ্ন বা নম্বর থাকে না। বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রশ্নের মানবন্টন নিম্নরূপঃ
ক্রমিক বিষয়ের নাম নম্বর ১ Bengali Language and Literature ৩৫ ২ English Language and Literature ৩৫ ৩ Bangladesh Affairs ৩০ ৪ International Affairs ২০ ৫ Geography, Environment and Disaster Management ১০ ৬ General Science ১৫ ৭ Computer and Information Technology ১৫ ৮ Mathematical Reasoning ১৫ ৯ Mental Ability ১৫ ১০ Ethics, Values and Good Governance ১০ সর্বমোট নম্বরঃ ২০০
এক নজরে বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষাঃ
- এটি ২০০ নম্বরের একটি MCQ পরীক্ষা।
- এই পরীক্ষার সময়কাল ২ ঘন্টা বা ১২০ মিনিট।
- প্রতিটি প্রশ্নের মান ১।
- প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.৫ নম্বর কাটা যাবে।
- প্রিলিমিনারি পরীক্ষার পাশ নম্বর শতকরা ৫০ ভাগ বা ৫০%।
- প্রতি বছর সাধারণত মে/জুন মাসে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
- প্রিলিমিনারি পরীক্ষার এক মাস আগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়।
- প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রায় এক থেকে দেড় মাস পরে ফলাফল প্রকাশিত হয়।
বিসিএস লিখিত পরীক্ষা (BCS Written Examination)
এটি বিসিএস পরীক্ষার দ্বিতীয় ধাপ বা পর্যায়। প্রথম ধাপ অর্থাৎ বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদেরকে বিসিএস লিখিত পরীক্ষা (BCS Written Examination) দেয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়।
বিসিএস লিখিত পরীক্ষা (BCS Written Examination) সর্বমোট ৯০০ নম্বরের একটি লিখিত পরীক্ষা। নির্ধারিত শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী মোট ২৬টি ক্যাডার (সাধারণ ক্যাডার এবং কারিগরি/পেশাগত ক্যাডার) প্রার্থীদেরকে নির্ধারিত কয়েকটি বিষয়ে সিলেবাস অনুযায়ী লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। এই পরীক্ষার সিলেবাস বিসিএস লিখিত সিলেবাস (BCS Written Syllabus) নামে পরিচিত।
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস নিয়োগ বিধিমালা, ২০১৪ অনুযায়ী লিখিত পরীক্ষায় একজন প্রার্থীকে নয়টি বাধ্যতামূলক বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হয়।
আরও পড়ুনঃ বিসিএস ক্যাডার তালিকা (BCS Cadre List)
বিসিএস লিখিত পরীক্ষার সিলেবাস (BCS Written Syllabus) ও মানবন্টনঃ
বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় সাধারণ ক্যাডার (General Cadre ও কারিগরি / পেশাগত ক্যাডার (Technical Cadre / Professional Cadre) উভয় ক্যাটাগরির প্রার্থীকে মোট ৯০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা দিতে হয়। এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে একজন প্রার্থীকে ন্যুনতম ৫০% নম্বর পেতে হয়। নিচে সাধারণ ক্যাডার (General Cadre ও কারিগরি / পেশাগত ক্যাডার (Technical Cadre / Professional Cadre) উভয় ক্যাটাগরির ক্যাডারের লিখিত পরীক্ষা আবশ্যিক বিষয়, নম্বর বন্টন ও পাশ নম্বর দেয়া হলোঃ
সাধারণ ক্যাডার (General Cadre)
ক্রমিক বিষয়ের নাম নম্বর পাশ নম্বর ১ ১০০ ৫০ ২ ১০০ ৫০ ৩ ২০০ ১০০ ৪ ২০০ ১০০ ৫ ১০০ ৫০ ৬ ৫০ ২৫ ৭ ৫০ ২৫ ৮ ১০০ ৫০ সাধারণ ক্যাডার - সর্বমোট নম্বরঃ ৯০০ ৪৫০
কারিগরি / পেশাগত ক্যাডার (Technical Cadre / Professional Cadre)
ক্রমিক বিষয়ের নাম নম্বর পাশ নম্বর ১ ১০০ ৫০ ২ ২০০ ১০০ ৩ ২০০ ১০০ ৪ ১০০ ৫০ ৫ ৫০ ২৫ ৬ ৫০ ২৫ ৯ ২০০ ১০০ টেকনিক্যাল ক্যাডার - সর্বমোট নম্বরঃ ৯০০ ৪৫০
উভয় ক্যাডার (Both Cadre) বা পদ সংশ্লিষ্ট (Job Related) বিষয়ের পরীক্ষাঃ
যে সকল প্রার্থী সাধারণ ও কারিগরি/পেশাগত উভয় ক্যাডারের পদের জন্য পছন্দক্রম দেবেন, তাদেরকে সাধারণ ক্যাডারের জন্য নির্ধারিত বিষয়ের ৯০০ নম্বরের অতিরিক্ত সংশ্লিষ্ট পদ বা সার্ভিসের জন্য প্রাসংগিক বিষয়ের ২০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা দিতে হয়।
এক নজরে বিসিএস লিখিত পরীক্ষাঃ
- এটি ৯০০ নম্বরের একটি লিখিত (Written) পরীক্ষা।
- লিখিত পরীক্ষার পাশ নম্বর শতকরা ৫০ ভাগ বা ৫০%।
- সাধারণত প্রতি বছরের অক্টোবর/নভেম্বর/ডিসেম্বর মাসে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
- প্রায় এক মাস আগে পরীক্ষার জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়।
- পরীক্ষার প্রায় ২ থেকে ৩ মাস পর সাধারণত ফলাফল প্রকাশিত হয়।
- উভয় ক্যাডারের প্রার্থীদেরকে অতিরিক্ত সংশ্লিষ্ট পদ বা সার্ভিসের জন্য প্রাসংগিক বিষয়ের ২০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা দিতে হয়।
ভাইভা (Viva Voce) / মৌখিক পরীক্ষা (Interview)
বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় গড়ে ৫০% নম্বর পেলে একজন প্রার্থীকে ভাইভা বা মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডাকা হয়। এটি বিসিএস পরীক্ষার (BCS Examination) এর ৩য় ধাপ। বিসিএস ভাইভা বা মৌখিক পরীক্ষা ২০০ নম্বরের একটি পরীক্ষা। এই পরীক্ষার পাশ নম্বর ৫০%। উল্লেখ্য যে, অন্য দুই ধাপের চেয়ে এ ধাপে সাফল্যের হার খুবই নগণ্য।
লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের উপযুক্ততা নির্ধারণের জন্য বিসিএস পরীক্ষা বিধিমালার বিধান অনুযায়ী কমিশন তিন সদস্য বিশিষ্ট মৌখিক পরীক্ষার বোর্ড গঠন করে থাকে। বিসিএস ভাইভা বোর্ড একজন চেয়ারম্যান ও দুই জন সদস্য নিয়ে গঠিত হয়।
চুড়ান্ত নির্বাচন (Final Selection)
বাংলাদেশ কর্ম কমিশন (Bangladesh Public Service Commission) বিসিএস প্রার্থীদের লিখিত পরীক্ষার সংগৃহীত নম্বর (লিখিত ৯০০ নম্বরের মধ্যে) এবং মৌখিক পরীক্ষার সংগৃহীত নম্বরের (২০০ নম্বরের মধ্যে) উপর ভিত্তি করে চূড়ান্ত যোগ্যতা নির্ধারণ করে। পূর্বে কোটা এবং মেধা অনুসারে বাছাই করা হলেও বর্তমানে শতভাগ প্রার্থী মেধা অনুসারে বাছাই করা হয়। বাংলাদেশ কর্ম কমিশন (Bangladesh Public Service Commission) যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থীদের নিয়োগের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বিশেষ সুপারিশ করে। এরপর পর্যায়ক্রমে স্বাস্থ্য পরীক্ষা, পুলিশ ভেরিফিকেশন এবং এনএসআই ভেরিফিকেশন শেষে তাদের নাম গেজেট আকারে প্রকাশ করে। সাধারণত এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে এক থেকে দেড় বছর সময় লাগে।
শেষ কথা
বিসিএস ক্যাডার হতে হলে একজন প্রার্থীর ন্যুনতম যোগ্যতা থাকাই বড় কথা নয়, বরং বিসিএস পরীক্ষা (BCS Examination) নামের কয়েক ধাপের কঠিন ও কঠোর একটি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে নিজের সক্ষমতাকে প্রমাণ করতে হয়। নিঃসন্দেহে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের একজন কর্মকর্তা বা ক্যাডার হওয়া অত্যন্ত সম্মান ও গর্বের ব্যাপার হলেও এটি নিয়ে শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত আগ্রহ ও বিসিএস কেন্দ্রিক পড়াশুনা বহুলাংশেই তাদের শিক্ষাজীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।