বিসিএস (BCS) এর পূর্ণ অর্থ হচ্ছে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (Bangladesh Civil Service)। আর বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে কর্মকর্তা বা ক্যাডার নিয়োগের পরীক্ষাকে বলা হয় বিসিএস পরীক্ষা (BCS Examination)। বাংলাদেশ কর্ম কমিশন (Bangladesh Public Service Commission – BPSC) দ্বারা এই পরীক্ষা গৃহীত হয়ে থাকে। আমরা এই ওয়েবসাইটে বিসিএস (BCS) এর আদ্যপান্ত নিয়ে আলোচনা করবো।
বিসিএস (BCS – Bangladesh Civil Service)
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস যা ভারতীয় উপমহাদেশে বিট্রিশ শাসন আমলের ইম্পেরিয়াল সিভিল সার্ভিস থেকে উদ্ভূত হয়েছে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত নীতিনির্ধারকদের প্রণীত নীতি মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ কর্ম কমিশন বা বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (বিপিএসসি) কতৃক নিয়োগকৃত যে বেসামরিক কর্মকর্তা বা কর্মচারিরা কাজ করেন, তাদেরকেই বিসিএস ক্যাডার (BCS Cadre) বলা হয়। প্রজাতন্ত্রের এই বেসামরিক কর্মচারিদেরকে বাংলাদেশ কর্ম কমিশন (Bangladesh Public Service Commission – BPSC) দ্বারা পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ করা হয়। বাংলাদেশ কর্ম কমিশন বা বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (বিপিএসসি) হল বিসিএসের প্রধান নীতি নির্ধারণ ও নিয়োগ সংস্থা। প্রশাসন বা মাঠ পর্যায়ে সরকারী নীতি বাস্তবায়নে নিয়োজিত বা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারিরাই হচ্ছেন বিসিএস ক্যাডার। বাংলাদেশে মোট ২৬টি ক্যাটাগরিতে বিসিএস ক্যাডার নিয়োগ করা হয়।
দেখুনঃ বিসিএস ক্যাডার তালিকা (BCS Cadre List)
প্রতি বছর বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস বা বিসিএস এ নিয়োগের জন্য বাংলাদেশ কর্ম কমিশন (BPSC) কতৃক বিজ্ঞপ্তি বা সার্কুলার প্রকাশিত হয়, এই সার্কুলারটিই মূলতঃ বিসিএস সার্কুলার (BCS Circular) নামে অধিক পরিচিত। বিসিএস ক্যাডার হিসেবে নিয়োগের জন্য একজন যোগ্য প্রার্থীকে নির্দ্দিষ্ট তারিখের মধ্যে আবেদনপূর্বক পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়।
বিসিএস পরীক্ষা (BCS Examination)
বিসিএস ক্যাডার নিয়োগের যে পরীক্ষা, তাকেই সংক্ষেপে বিসিএস পরীক্ষা বা BCS Examination বা সংক্ষেপে BCS Exam বলা হয়। বিসিএস পরীক্ষা একটি অত্যন্ত প্রতিযোগীতামূলক চাকরীর পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় মোট যত জন প্রার্থী আবেদন করেন, তার মোট সংখ্যা বিশ্বের অনেক দেশের মোট জনসংখ্যার চেয়েও বেশী। এই বিসিএস পরীক্ষা মোট তিনটি পর্যায়ে বা ধাপে অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম ধাপকে বিসিএস প্রিলিমিনারি (প্রিলি), দ্বিতীয় ধাপকে বিসিএস লিখিত পরীক্ষা এবং বিসিএস ভাইভা বা সাক্ষাৎকার বলা হয়। বাংলাদেশ কর্ম কমিশন (Bangladesh Public Service Commission) দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মোট নম্বর বিবেচনা করে চূড়ান্ত যোগ্যতা নির্ধারণ করে যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থীদের ক্যাডার নিয়োগের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বিশেষ সুপারিশ করে।
বিসিএস পরীক্ষায় সকল ক্যাডার মিলে গড় সাফল্যের হার ০.০২% এবং সাধারণ ক্যাডারের ক্ষেত্রে যা মাত্র ০.০০৫% শতাংশ। বিসিএস পরীক্ষার প্রক্রিয়া (BCS Exam Process), বিসিএস আবেদন যোগ্যতা (BCS Apply Qualification), বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নের মানবন্টন সহ বিসিএস পরীক্ষার বিস্তারিত জানতে আমাদের বিসিএস পরীক্ষা (BCS Examination) অংশটি দেখুন।
বিসিএস ক্যাডারের যোগ্যতা (Qualification)
বিসিএস ক্যাডার হতে হলে একজন প্রার্থীর কী কী যোগ্যতা লাগে? বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিতে একজন প্রার্থীকে প্রাথমিক ভাগে শিক্ষাগত যোগ্যতা, বয়স ও নাগরিকত্ব সংক্রান্ত যোগ্যতার মাপকাঠিতে উত্তীর্ণ হতে হয়। বিসিএস প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা ন্যুনতম স্নাতক/অনার্স (চার বছরের), বয়স ২১ থেকে ৩০ বছর এবং বাংলাদেশের নাগরিক হতে হয়। বিসিএস এর আবেদন থেকে শুরু করে ক্যাডার হিসেবে নিয়োগ পর্যন্ত সমস্ত প্রয়োজনীয় যোগ্যতার বিবরণ সম্পর্কে জানতে দেখুন – বিসিএস আবেদন যোগ্যতা (BCS Apply Qualification)।
বয়স ক্যালকুলেটর (BCS Age Calculator) দিয়ে দেখুন আপনার বয়স বিসিএস পরীক্ষা দেয়ার বয়সসীমার মধ্যে আছে কী না?
বিসিএস পরীক্ষার সিলেবাস (BCS Syllabus)
বিসিএস নামক প্রতিযোগীতামূলক পরীক্ষাটি একটি পূর্ব নির্ধারিত সিলেবাস অনুসারে অনুষ্ঠিত হয়, এই সিলেবাসটিই বিসিএস পরীক্ষার সিলেবাস বা বিসিএস সিলেবাস (BCS Syllabus) নামে পরিচিত। প্রাথমিক বাছাইয়ের জন্য গৃহীত বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষাটি ২০০ নম্বরের MCQ পরীক্ষা। বিস্তারিত জানতে দেখুন – বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার সিলেবাস (BCS Preliminary Syllabus) ও বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা (BCS Preliminary Examination)। প্রথম ধাপ অর্থাৎ, প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদেরকে পরবর্তীতে ৯০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিতে হয় যা বিসিএস লিখিত পরীক্ষা (BCS Written Exam) নামে অধিক পরিচিত। বিসিএস লিখিত পরীক্ষা ও বিসিএস লিখিত পরীক্ষার সিলেবাস অংশে এ সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা আছে। বিসিএস ভাইভা বা মৌখিক পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত কোন সিলেবাস নেই।